অনলাইন ডেস্ক : রাজাকারদের তালিকায় মুক্তিযোদ্ধাদের নাম আসা রহস্যজনক উল্লেখ করে প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা বলেছেন, যখন সারা দেশের মানুষ বিজয় উৎসব পালন করছেন তখন মুক্তিযোদ্ধাদের পরিবার এমন খবরে খুব কষ্ট পেয়েছেন, দুঃখ পেয়েছেন। তাদেরকে আমি বলবো তারা যেন শান্ত থাকেন এবং ক্ষমাসুন্দর দৃষ্টিতে দেখেন। যারা যুদ্ধ করেছেন তাদের যদি রাজাকার শব্দটি শুনতে হয় তাহলে খারাপ লাগারই কথা। যারা মুক্তিযোদ্ধা তারা কোনোদিনও রাজাকারের তালিকায় থাকতে পারেন না। তিনি বলেন, তালিকা প্রকাশ করতে গিয়ে মুক্তিযোদ্ধা মন্ত্রণালয় গোলমাল করে ফেলেছে। এই তালিকাটি নিয়ে ভুল বোঝাবুঝি তৈরি হয়েছে। এটি খুব খারাপ কাজ হয়েছে। খুবই দুঃখজনক এবং কষ্টের বিষয়।
সন্ধ্যায় প্রধানমন্ত্রীর সরকারি বাসভবন গণভবনে আওয়ামী লীগের কার্যনির্বাহী সংসদের সভার সূচনা বক্তব্যে তিনি এসব কথা বলেন।
প্রধানমন্ত্রী বলেন, আমি মুক্তিযুদ্ধ বিষয়ক মন্ত্রীকে বলেছিলাম, তালিকাগুলো নিয়ে ভালোভাবে যাচাই-বাছাই করতে হবে। এত তাড়াতাড়ি এটি প্রকাশ করার কথা না। তাও বিজয় দিবসের আগে। এত সুন্দর বিজয় দিবস উদযাপন করলাম, কিন্তু শহীদ পরিবার, মুক্তিযোদ্ধা পরিবার এতে কষ্ট পেয়েছেন। তালিকাটি সময় নিয়ে প্রকাশ করা দরকার ছিল। আসলে আমিও ব্যস্ত হয়ে পড়েছিলাম সবদিক সময়মতো খেয়াল রাখতে পারিনি।
তিনি বলেন, রাজাকারদের তালিকা করতে গিয়ে, মুক্তিযুদ্ধের সময় যাদের বিরুদ্ধে মামলা হয়েছিল তাদের নামও তালিকাও ঢুকে পড়েছে। ১৯৭১ সালে যারা মুক্তিযুদ্ধে গিয়েছিল, আমাদের আওয়ামী লীগের যারা মুক্তিযুদ্ধে গিয়েছিলো তাদেরকে সন্ত্রাসী হিসেবে আখ্যা দিতে তাদের বিরুদ্ধে পাকিস্তান সরকার মামলা দায়ের করে। পরে জিয়াউর রহমান ক্ষমতায় এলে সেই তালিকা ধরে ধরে বিভিন্ন সময় আমাদের আওয়ামী লীগের নেতা কর্মীদেরকে শাস্তি দিতো। এটা এরশাদের সময়ও করা হয়েছে। তিনি বলেন, আপনাদের মনে আছে কিনা জানি না, একবার এক তালিকা বের হলো যে কিশোরগঞ্জের এক নম্বর সন্ত্রাসী জিল্লুর রহমান আর দুই নাম্বার আবদুল হামিদ সাব। পরে এটা শুনে খোঁজ নিয়ে দেখলাম ঐযে পাকিস্তান আমলের যে তালিকা সেখানে তাদের নাম রয়ে গেছে। সেই তালিকা থেকে রাজাকারের নাম নিতে গিয়ে সব মিলিয়ে মুক্তিযুদ্ধ বিষয়ক মন্ত্রণালয় এই গোলমালটি করে ফেলেছে। যারা মুক্তিযোদ্ধা তাদের নাম দেয়া হয়েছে। সেটি কীভাবে ওই তালিকায় চলে গেল এটি একটি রহস্যও বটে।
আওয়ামী লীগের বর্তমান কার্য নির্বাহী সংসদের সর্বশেষ বৈঠকে দলের গঠনতন্ত্র সংশোধনের খসড়া অনুমোদনসহ আসন্ন কাউন্সিলের প্রস্তুতি নিয়ে বিস্তারিত আলোচনা হয় বলে দলীয় সূত্র জানিয়েছে। আগামী ২০ এবং ২১শে ডিসেম্বর রাজধানীর সোহরাওয়ার্দী উদ্যানে এ কাউন্সিল অনুষ্ঠিত হবে।