অনলাইন ডেস্ক: নেপালের রাজধানী কাঠমাণ্ডু থেকে প্রায় পাঁচশ’ কিলোমিটার দূরের একটি গ্রাম। ওই গ্রামের সহজসরল মানুষগুলোকে টিকে থাকতে হয় প্রকৃতির সঙ্গে লড়াই করে। সেখানে বাস করেন রজ্জো ভার্মা নামে এক নারী। দুই পুত্র সন্তান রয়েছে তার। তবে অন্য সব সাধারণ নারীর চেয়ে একেবারেই ভিন্ন তার জীবন ও সংসার।
রজ্জো ভার্মার দুটি ছেলে থাকলেও তার কিন্তু ৫ জন স্বামী। নিশ্চয়ই অবাক হচ্ছেন! গ্রামের পুরনো ঐতিহ্য বজায় রেখেছে রজ্জো। স্বামীরা প্রত্যেকেই ভাই। প্রতি রাতে রজ্জো কার সঙ্গে শোবেন, সেই সিদ্ধান্ত নেয়ার এখতিয়ার শুধু তার। এটাই ওখানকার রীতিনীতি।
আধুনিক মানুষের কাছে অবাক করা বিষয় হলেও সেটাই ওই গ্রামের ঐহিত্য। মাতৃপ্রধান ওই উপজাতিদের মধ্যে একজন নারীই একাধিক পুরুষের পাণিগ্রহণ করেন।
রজ্জো ভার্মার ৫ স্বামীর নাম সন্ত রাম, বাজ্জু, গোপাল, গুড্ডু, দীনেশ। ৫ স্বামী সন্তান নিয়ে সুখে সংসার করছেন রজ্জো। তাদের মধ্যে কোন অশান্তি নেই বলে জানিয়েছেন স্থানীয়রা।
ওই গ্রামে একইভাবে সুখে সংসার করছেন সুনীতা দেবী। তিনি অবশ্য দুই স্বামীর স্ত্রী। তার দুই স্বামীও দুই ভাই। একজন রঞ্জিত সিং অন্যজন চান্দের প্রকাশ।
সুনীতা জানান, তিনি খুবই ভাগ্যবতী। কারণ দুজন স্বামীর স্ত্রী তিনি। একজন রান্নায় তাকে সাহায্য করেন এবং অন্যজন বাচ্চা মানুষ করার কাজে নিয়োজিত।
একইভাবে ওই গ্রামের বুদ্ধি দেবীও বিয়ে করেন দুই ভাইকে। বুদ্ধি দেবীর বয়স এখন প্রায় ৮০। তার এক স্বামী মারা গেছেন এবং অন্যজনের সঙ্গে এখন সংসার করছেন তিনি।
বুদ্ধি দেবী জানান, তাদের এই ঐতিহ্য গত শতাব্দীর ধরে চলে আসছে। তাদের যে জমি রয়েছে সেই জমি ছেলেদের মধ্যে ভাগ করে দেওয়া হয়। পরবর্তীকালে তারা যখন আবার বিয়ে করেন, তখন সেই জমি তাদের পরবর্তী প্রজন্মকে দান করে থাকেন। কিন্তু প্রত্যেক ভাইয়ের যেহেতু একটি মাত্র স্ত্রী হয় তাই আলাদা করে জমি প্রত্যেকের নামে ভাগাভাগি হওয়ার প্রয়োজন হয় না।
বহুস্বামী প্রথাকে সহজ ভাবেই নিয়েছেন সেখানকার মানুষ। এমনকি এই প্রথার কারণে প্রতিকূল পরিবেশে সন্তান পালন এবং সংসারের কাজকর্ম সহজ হয়ে গেছে বলেও মনে করেন স্থানীয়রা।