ফার্স্টনিউজবিডি রিপোর্ট: প্রাথমিকের বৃত্তি পরীক্ষার ফল প্রকাশের চার ঘণ্টা পর স্থগিত করা হয়েছে। ফলাফলে ত্রুটি থাকায় বিকাল ৫টার দিকে তা স্থগিত করা হয়। এর আগে দুপুরে সচিবালয়ে প্রাথমিক ও গণশিক্ষা মন্ত্রণালয়ের সম্মেলন কক্ষে সংবাদ সম্মেলনে বৃত্তির ফল প্রকাশ করা হয়। এ সময় প্রতিমন্ত্রী মো. জাকির হোসেন, সচিব ফরিদ আহাম্মদ ও প্রাথমিক শিক্ষা অধিদপ্তরের মহাপরিচালক শাহ রেজওয়ান হায়াতসহ কর্মকর্তারা উপস্থিত ছিলেন। কিন্তু বিকাল পৌনে ৫টায় সব ডিপিইওদের (জেলা প্রাথমিক শিক্ষা কর্মকর্তা) ই-মেইলে পাঠিয়ে ফল স্থগিত করে প্রাথমিক শিক্ষা অধিদপ্তর। এতে উপজেলা শিক্ষা কর্মকর্তাদের মাধ্যমে বিষয়টি সব প্রধান শিক্ষকদের জানিয়ে দিতে বলা হয়েছে। তবে কী কারণে ফল স্থগিত করা হয়েছে তা জানানো হয়নি। ই-মেইলে বলা হয়, সংশোধিত ফলাফল কয়েকদিনের মধ্যে যাবে। ঘোষিত ফল স্থগিত করা হয়েছে।
প্রাথমিক শিক্ষা অধিদপ্তরের সিনিয়র সিস্টেম এনালিস্ট অনুজ কুমার রায় বলেন, এখানে কোডিংয়ে কিছুটা সমস্যা হয়েছে। তাই আমরা কারিগরি সমস্যা সমাধানে কাজ করছি। আশা করছি শিগগিরই এর সমাধান হয়ে যাবে।
দুপুরে সংবাদ সম্মেলনে জানানো হয়, এ বছর পঞ্চম শ্রেণিতে ৮২ হাজার ৩৮৩ জন শিক্ষার্থী বৃত্তি পেয়েছে। এর মধ্যে ট্যালেন্টপুলে বৃত্তি পেয়েছে ৩৩ হাজার। আর সাধারণ কোটায় বৃত্তি পেয়েছে ৪৯ হাজার ৩৮৩ শিক্ষার্থী। বৃত্তিপ্রাপ্ত শিক্ষার্থীরা অষ্টম শ্রেণি পর্যন্ত বৃত্তির সুবিধা ভোগ করবেন। ২০২০ ও ২০২১ সালে করোনা পরিস্থিতির কারণে প্রাথমিক শিক্ষা সমাপনী পরীক্ষা না হওয়ায় প্রাথমিক বৃত্তি দেয়া সম্ভব হয়নি। ২০২২ সালের ২৮শে নভেম্বর প্রাথমিক ও গণশিক্ষা মন্ত্রণালয়ে অনুষ্ঠিত আন্তঃমন্ত্রণালয় সভায় ২০২২ সাল থেকে প্রাথমিক বৃত্তি পরীক্ষা নেয়ার সিদ্ধান্ত হয়। গত ৩০শে ডিসেম্বর একযোগে সারা দেশে প্রাথমিক বৃত্তি পরীক্ষা অনুষ্ঠিত হয়। এবারের বৃত্তি পরীক্ষায় ৫ লাখ ৩৯২ জন নিবন্ধন করে অংশ নেয় ৪ লাখ ৮২ হাজার ৯০৪ জন। উপজেলা/থানার প্রাথমিক বৃত্তি পরীক্ষায় অংশগ্রহণকারী ছাত্রছাত্রীদের সংখ্যার অনুপাতে উপজেলা/থানা কোটা নির্ধারণ করে ট্যালেন্টপুল বৃত্তি বণ্টন করা হয়। সাধারণ বৃত্তি ইউনিয়ন ও পৌরসভা ওয়ার্ডভিত্তিক বিতরণ করা হয়।
এদিকে বৃত্তির ফল ঘোষণার পর প্রাথমিক ও গণশিক্ষা প্রতিমন্ত্রী মো. জাকির হোসেন সাংবাদিকদের বিভিন্ন প্রশ্নের উত্তর দেন। সরকার দেশের প্রাথমিক শিক্ষার ভিত শক্তিশালী করতে নানামুখী উদ্যোগ নিয়েছে জানিয়ে তিনি বলেন, প্রাথমিক বিদ্যালয়ের শিক্ষার্থীদের মধ্যে বিনামূল্যে বই বিতরণ, উপবৃত্তি দেয়া, মিড-ডে মিল চালু করা, অবকাঠামোগত উন্নয়ন, অতিরিক্ত শ্রেণিকক্ষ নির্মাণ, প্রাক-প্রাথমিক শিক্ষা চালু, প্রধান ও সহকারী শিক্ষকদের বেতন স্কেল উন্নীতকরণসহ বিভিন্ন বাস্তবসম্মত কার্যক্রম অব্যাহত রেখেছে সরকার। প্রতিমন্ত্রী বলেন, প্রাথমিক শিক্ষাকে আরও গতিশীল করার লক্ষ্যে ২০১৩ সালে আমরা ২৬ হাজার ১৯৩টি সরকারি রেজিস্ট্রার্ড ও কমিউনিটি বেসরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয়কে জাতীয়করণসহ প্রধান শিক্ষকের পদকে দ্বিতীয় শ্রেণির পদমর্যাদা দেয়া এবং সহকারী শিক্ষকদের বেতন স্কেল এক ধাপ উন্নীত করাসহ ১ লাখ ৫ হাজার ৬১৬ জন শিক্ষকের চাকরি সরকারিকরণ করা হয়েছে।
সংবাদ সম্মেলনে প্রাথমিক ও গণশিক্ষা সচিব ফরিদ আহাম্মদ জানান, আগামী দুই সপ্তাহের মধ্যেই প্রাথমিকের সহকারী শিক্ষক পদে আরও দুটি নিয়োগ বিজ্ঞপ্তি প্রকাশ করা হবে। তিনি বলেন, রংপুর, বরিশাল ও সিলেট বিভাগের নিয়োগ বিজ্ঞপ্তি প্রকাশ করা হয়েছে। নিয়োগে যেহেতু সময়ক্ষেপণ হয় সেহেতু আমরা বিভাগভিত্তিক ক্লাস্টার পদ্ধতিতে এগোচ্ছি। এ পদ্ধতিতে ছয় মাসের মধ্যে নিয়োগ দেয়া সম্ভব হবে।