অনলাইন ডেস্ক : সাতক্ষীরার কলারোয়া উপজেলায় ব্যবসায়ী জি এম তুষার হোসেনের (৩০) ডান হাতের চারটি আঙুল কেটে নেওয়ার অভিযোগ উঠেছে উপজেলা ছাত্রলীগের সাধারণ সম্পাদক মেহেদি হাসান নাইস ও তার সহযোগীর বিরুদ্ধে।
আজ শনিবার দুপুরে পৌর সদরে এ ঘটনা ঘটে। আহত তুষারকে গুরুতর আহত অবস্থায় সাতক্ষীরা হাসপাতাল থেকে খুলনা মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে স্থানান্তর করা হয়েছে।
তুষার হোসেন কলারোয়া বাসস্ট্যান্ড এলাকায় অবস্থিত তুষার ইলেকট্রনিক্সের মালিক। তিনি কলারোয়া উপজেলা ছাত্রলীগের সাবেক সাংগঠনিক সম্পাদক।
জমি দখল সংক্রান্ত বিরোধের জের ধরে এ হামলা হয়েছে বলে জানিয়েছেন তুষারের বাবা।
প্রত্যক্ষদর্শীরা জানায়, আজ বেলা দেড়টার দিকে বাসস্ট্যান্ডের বিশ্বাস মার্কেটের সামনে উপজেলা ছাত্রলীগের সাধারণ সম্পাদক মেহেদি হাসান নাইসের নেতৃত্বে পাঁচ-সাতজন যুবক তুষারকে বেধড়ক মারপিট করেন। পরে তুষার চিকিৎসার জন্য কলারোয়া হাসপাতালে গেলে বেলা ২টার দিকে হাসপাতাল চত্বরেই আবার কয়েকজন যুবক তার ওপর হামলা চালায়। এ সময় রামদার কোপে তুষারের ডান হাতের চারটি আঙুল সম্পূর্ণ বিচ্ছিন্ন হয়ে যায়। পরে হামলাকারীরা হাসপাতালের পাচিল টপকে দ্রুত পালিয়ে যান। গুরুতর আহতাবস্থায় প্রাথমিক চিকিৎসা দিয়ে তুষারকে সাতক্ষীরা হাসপাতালে নেয়া হয়। সেখান থেকে খুলনা মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে স্থানান্তর করা হয়।
কলারোয়া হাসপাতালের আবাসিক মেডিকেল অফিসার (আরএমও) ডা. শফিকুল ইসলাম জানান, আজ বেলা ২টার দিকে আহত অবস্থায় তুষার হোসেন হাসপাতালে ভর্তি হওয়ার জন্য টিকিট সংগ্রহ করে দ্বিতীয় তলায় ওয়ার্ডে যাচ্ছিলেন। এ সময় হাসপাতালের গোলচত্বরের সামনে কয়েকজন যুবক হামলা চালিয়ে তার ডান হাতের তালু থেকে চারটি আঙুল সম্পূর্ণ বিচ্ছিন্ন করে দেয়। উন্নত চিকিৎসার জন্য তাকে সাতক্ষীরায় রেফার্ড করা হয়েছে।
আহত তুষারের বাবা মুনছুর গাজী বলেন, ‘পাটুরিয়া গ্রামে ৩৩ শতক জমি নিয়ে আমাদের সঙ্গে বিরোধ চলছিল জনৈক মন্টুদের। এরই জের ধরে দুপুরে ছাত্রলীগের সাধারণ সম্পাদক মেহেদি হাসান নাইসের নেতৃত্বে মন্টু, পলাশ, বাবু, জুয়েলসহ কয়েকজন নেতাকর্মী তুষারকে বাসস্ট্যান্ড এলাকায় পিটিয়ে আহত করে। পরে হাসপাতাল চত্বরে রামদা দিয়ে তার ডান হাতের চারটি আঙুল কেটে দিয়েছে।’
তবে অভিযোগ অস্বীকার করে উপজেলা ছাত্রলীগের সাধারণ সম্পাদক শেখ মেহেদী হাসান নাইস বলেন, ‘একটি জমি ক্রয়-বিক্রয় নিয়ে বিরোধ চলে আসছিল তুষার হোসেনের সঙ্গে। এ নিয়ে আজ বেলা ১টার দিকে কলারোয়া ইসলামী ব্যাংকের সামনে তুষার ও উপজেলা ছাত্রলীগ নেতাদের সঙ্গে কথা কাটিকাটি ও মারপিট হয়। এতে উভয় পক্ষের মধ্যে দুই-তিনজন সামান্য আহত হয়।’
শেখ মেহেদী হাসান নাইস বলেন, ‘তুষার হোসেন মারামারির বিষয়টি পুলিশকে জানিয়ে কলারোয়া হাসপাতালে ভর্তি হন। এ খবর পেয়ে উপজেলা ছাত্রলীগের কয়েকজন নেতাকর্মী বেলা দেড়টার দিকে সেখানে উপস্থিত হন। হাসপাতালের সামনে দাঁড়িয়ে থাকা তুষারের সঙ্গে ছাত্রলীগ নেতাকর্মীরা কথা বলতেই হঠাৎ লোহাকুড়া গ্রামের বাবু তার কাছে থাকা দা দিয়ে তুষারকে কোপ দেন। এতে হাত দিয়ে ঠেকাতে গেলে তার ডান হাত কেটে যায়। বাবু ছাত্রলীগের কেউ নন। সে জামায়াত পরিবারের সদস্য। সে বিষয়টি ঘোলাটে করতে এ ঘটনাটি ঘটিয়েছে।’
এ বিষয়ে উপজেলা ছাত্রলীগের সভাপতি শেখ সাগর হোসেন বলেন, একটি গ্রুপ ছাত্রলীগের সুনাম নষ্ট করার জন্য মরিয়া হয়ে উঠেছে। তুষারের মারপিটের সময় তিনি হাসপাতালের বাইরে ছিলেন।
কলারোয়া থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) মনিরুজ্জামান জানান, এ ঘটনায় আহত তুষারের চাচা আবু সিদ্দিক বাদী হয়ে থানায় একটি মামলা দয়েরের প্রস্তুতি নিচ্ছেন। দোষীদের বিরুদ্ধে আইনগত ব্যবস্থা নেয়া হবে।