স্টাফ রিপোর্টার : স্বপ্নের পদ্মা সেতু এখন পুরোপুরি দৃশ্যমান। অসংখ্য পিলারের উপর এখন ঠায় দাঁড়িয়ে আছে সেতুটির ৪১ টি স্প্যান। পদ্মা সেতুর শেষ স্প্যান আজ বৃহস্পতিবার(১২ ডিসেম্বর) বসানোর মাধ্যমে সেতুটির সবগুলো স্প্যান বসানোর কাজ সম্পন্ন হয়েছে। দৃশ্যমান হয়েছে সেতুর পুরো ৬.১৫ কিলোমিটার।
পদ্মা সেতু ২০২২ সালের জুন নাগাদ যানবাহনের জন্য উন্মুক্ত করে দেওয়ার পরিকল্পনা করা হয়েছে। তবে এখন পর্যন্ত নির্মাণেই পদ্মা সেতু তিনটি বিশ্ব রেকর্ডে নিজের নাম লিখিয়ে ফেলেছে।
প্রথম রেকর্ডটি হচ্ছে ভূমিকম্প সহনশীলতা। পদ্মা সেতুতে বিশ্বের প্রথম ‘ফ্রিকশন পেন্ডুলাম বিয়ারিং’ সিস্টেম ব্যবহার করা হয়েছে। এই বিয়ারিং গুলোর এক একটি অন্তত ১০ হাজার টন ভর বহনে সক্ষম। এখন পর্যন্ত বিশ্বের কোনো সেতুতে এমন সক্ষমতার বিয়ারিং লাগানো হয়নি। রিখটার স্কেলে ৯ মাত্রার ভূমিকম্পেও টিকে থাকতে পারবে পদ্মা সেতু।
দ্বিতীয় রেকর্ডটি মূল সেতুর পাইলিং নিয়ে। পদ্মা সেতুতে যে পাইলিং ব্যবহার করা হয়েছে এটি মাটির নিচে সর্বোচ্চ ১২২ মিটার গভীরে গিয়ে ঠেকেছে। এই স্টিলের পাইলগুলো ৩ মিটার ব্যাসার্ধের এবং বিশ্বের কোথাও এখনও কোনো সেতু তৈরিতে এত গভীর এবং মোটা পাইলিং করার নজির নেই, যা পদ্মা সেতুকে অনন্য বৈশিষ্ট্য এবং রেকর্ডের অধিকারী করেছে।
তৃতীয় রেকর্ডটি হচ্ছে নদীশাসন। পদ্মা পৃথিবীর ৩য় খরস্রোতা নদী। তাই এর নদীশাসনের কাজটি অত্যন্ত ঝুঁকিপূর্ণ। সে কারণেই চীনা সংস্থা সিনোহাইড্রো কর্পোরেশনের সঙ্গে ১১০ কোটি মার্কিন ডলারের নদীশাসন চুক্তি হয়েছে। এতবড় চুক্তির জন্য দরপত্র আহ্বান বিশ্বের আর কোনো সেতুর জন্য করা হয়নি। এছাড়াও পদ্মা সেতুর পাইলিং এবং খুঁটির কিছু অংশে এক বিশেষ ধরণের মিহি সিমেন্ট মাইক্রোফাইন ব্যবহার করা হয়েছে যা অস্ট্রেলিয়া থেকে আমদানি করা হয়েছে। এ ধরণের অতি সূক্ষ্ম সিমেন্ট সাধারণত এ ধরণের মেগা প্রজেক্টে ব্যবহার করা হয় না।